বহুমুখী প্রতিভা হোসেন ইমাম

প্রথম প্রকাশঃ আগস্ট ৩, ২০১৫ সময়ঃ ৬:৫৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:০৪ অপরাহ্ণ

মোহাম্মদ ইমাম হাসান সৌরব

হোসেন ইমাম
একজন মানুষ হয়তো নিজের কর্মময় জীবনে একটি ক্ষেত্রে সফল হয়। অধিকাংশের বেলায় দেখা যায়, একটি বিষয়ে সফলতার দেখা পেলে অন্য দিকে আর নজর দেননা কিংবা দেয়ার সময় অথবা ইচ্ছে কোনটাই আর থাকেনা। আবার অনেকের বেলায় ব্যাতিক্রমও হয়। নিজের কর্মগুনে জায়গা করে নেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে। সৃষ্টিশীলতায়, মেধায়-মননে জায়গা করে সমাজের বিশাল অংশের মন। এমনই একজন ব্যাক্তিত্ব হোসেন ইমাম।

একাধারে গীতিকার, অভিনেতা, ব্যবসায়ী এবং সংগঠক। প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল। কোনটা রেখে কোনটা বলা যায়। গানের কথা দিয়ে শুরু করি। চট্টগ্রামের ছেলে ইমামের গানের লেখা শুরুটা আশির দশকের শেষ দিকে। সেই থেকে পথচলা শুরু। অসংখ্য গান লিখেছেন। আর জনপ্রিয় গানের সংখ্যাটাও কম নয়। শুধু মনের আনন্দে গান লিখেন তিনি। তাঁর অধিকাংশ গানের সুর করেছেন ও কন্ঠ দিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চু। এছাড়া জনপ্রিয় ব্যান্ড দল ওয়ারফেইজের জন্যও গান লিখেছেন।

এই ব্যাপারে হোসেন ইমাম জানান, পয়সার জন্য আমি গান লিখিনা। শুধু মাত্র মনের খোরাক মেটাতে এই গান লিখা। তিনি মানুষের মনের আনন্দ-বেদনা আর স্বপ্নকে নিয়ে গান লিখেন । আর তাঁর গান শুনে যখন দর্শক-শ্রোতারা আনন্দে মেতে ওঠেন তখন ব্যাপক পুলকিত হন এই মেধাবী গীতিকার। আর এরই মধ্যে পাঁচ শতাধিক গান লিখে অনেকের মনেই তিনি জায়গা করে নিয়েছেন।হোসেন ইমাম

গত পঁচিশ বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাস করছেন হোসেন ইমাম। সেখানেই স্ত্রী, দুই মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। এদিকে, একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হোসেন ইমাম। বিভিন্ন দেশে ব্রান্ডের পন্য রপ্তানি করেন। তাই বলে, দেশকে ভুলে যাননি। এখনো মাটির টানে প্রায়ই দেশে আসেন। দেশের মানুষকে অনেক ভালবাসেন। তাঁর ফেসবুক পেইজে স্ট্যাটাসগুলো দেখলেই যে কেউ বুঝতে পারবেন দেশের প্রতি তাঁর কত গভীর টান।

পর্দার আড়ালে এই সৃষ্টিশীল ব্যাক্তিকে পর্দার সামনে আনেন আরেক গুনী নির্মাতা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী। ফারুকীর টেলিভিশনে অভিনয় করে সব শ্রেনী পেশার মানুষের ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন ইমাম। পরবর্তীতে আবু শাহেদ ইমনের ‘দ্যা কন্টেইনার’ এবং  ‘লিগ্যাল অ্যাডভাইজারে’  নিজের অভিনয় দক্ষতার প্রমান দিয়েছেন। এছাড়া, মোবাইল সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকসহ বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপন তাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা দিয়েছে। আর বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় এক পরিচালকের সাথে একটি ডকুমেন্টারিতে অভিনয় করছেন।

এত ব্যস্ততার মাঝেও আরেকটি সৃষ্টিশীল কাজের সাথে জড়িত হোসেন ইমাম। সেটা বই লিখা। এরই মধ্যে উল্লেখ যোগ্য বইয়ের মধ্যে ক্ষোভ, ইথেন ও রুপালি রাত্রী’ অন্যতম। আর প্রত্যেকটি বই বোদ্ধা ও পাঠকদের কাছে বেশ সমাদৃত হয়েছে।

এই সৃষ্টিশীল ও গুনি মানুষ নিজ শহর চট্টগ্রামের জনপ্রিয় ছিলেন, ঠিক তেমনি কোরিয়া গিয়েও কোরিয়ান নাগরিকদের পাশাপাশি প্রবাসী বাঙ্গালিদের মন জয় করেছেন । নিরন্তর জড়িত থাকেন বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে। বাংলাদেশ কালচারাল কমিউনিটি ইন কোরিয়ারও সভাপতি হোসেন ইমাম। অবসর খুব একটা পাননা। এরপরও সুযোগ করে হেভি মেটালের গান শুনেন। মাঝে মাঝে কখনো একা আবার কখনো পরিবার নিয়ে লংড্রাইভে বের হয়ে যান।হোসেন ইমাম

তিনি মিস করেন বাংলাদেশী খাবার। বিশেষ করে গরুর মাংস। চট্টগ্রামের ছেলে বলে কথা। তাইতো মাঝে মাঝে কোরিয়াতে বসেও এইসব স্বাদ নেয়া চাই তার। আর চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বেলা বিস্কুট দিয়ে চা খাওয়াটাও খুব মনে পড়ে তার। দেশে আসলে বেলা বিস্কুটটা খেতেই হবে হোসেন ইমামকে। এছাড়া স্মোকড সালমন, ব্ল্যাক কফি, ভার্জিন অলিভ আর পাস্তাতেও বেশ রুচি তার।

একজন মানুষ এত দিকে কিভাবে সফল হয়-এমন প্রশ্নে ইমাম জানান, মেধার পাশপাশি চেষ্টা, আন্তরিকতা এবং সততাই একটা মানুষকে সফল করে। একনিষ্ঠতা আর একাগ্রতা থাকলে সফলতা ধরা দিবেই। তাইতো নিজেকে উজাড় করে দিয়ে নিজের প্রতিটি দিন কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন হোসেন ইমাম, তা যেখানেই থাকুন, বাংলাদেশ কিংবা কোরিয়া অথবা পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে।

প্রতিক্ষণ/এডি/সজল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G